ডা: আসিফ ইকবাল, ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ

পোলিওর জীবাণুদের পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় করা গেছে। মুছে গেছে বসন্তের জীবানুরাও। টিকা(Vaccination)  দিয়েই এইসব মারাত্মক জীবাণুদের সংক্রমণ থেকে বিশ্বের কোটি কোটি শিশুদের রক্ষা করা গেছে। একটা সময় ছিল যখন বাচ্চাদের হুপিং কাশি ও ডিপথেরিয়া নামক অসুখ নিয়ে বাড়ির মানুষজন তো বটেই চিকিতসকরাও আতঙ্কে থাকতেন। অবশেষে আবিষ্কৃত হল টিকা। বাধ্যতামূলক ভাবে হুপিং কাশি (whooping cough), ডিপথিরিয়া (Diphtheria) আর ধনুষ্টঙ্কারের টিকা দিয়ে এই সব মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হল। একই ভাবে গুটি বসন্তের (Smallpox)মড়ককেও আটকে দেওয়া হল।

তবে শুধু শিশুদেরই নয় সিনিয়র সিটিজেনদের ভাল রাখতে নির্দিষ্ট কিছু টিকা দেওয়া জরুরি। মেডিক্যাল সায়েন্সের অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নানান জীবানুদের বাড়বাড়ন্ত অব্যাহত। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও সক্রিয় এদের বিরুদ্ধে কামান দাগতে। এখন টিবি থেকে হেপাটাইটিস, নিউমোনিয়া থেকে হাম বা টাইফয়েডের মত অসুখ বিসুখকেও রুখে দেওয়া যায় ভ্যাক্সিনের সাহায্যে। কিন্তু নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট মাত্রায় টিকা দিতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে। এক্সট্রিম এজ গ্রুপ অর্থাৎ শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে সংক্রমণজনিত অসুখ বিসুখের প্রকোপ বেশি। আর বয়সটা মেডিক্যাল সায়েন্সের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ তো বটেই।

আরও পড়ুন : জ্বর হলেই অ্যান্টিবায়োটিক নয়

এবারে জেনে নেওয়া যাক প্রবীণ মানুষদের কী কী টিকা নেওয়া জরুরি। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এজিং (এনআইএ) এই নিয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশেও সিনিয়র সিটিজেনদের টিকা দিয়ে সুস্থ রাখার জন্য সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চলছে।

Read More: ICU to deal with Critical Situations

  • বেশি বয়সে শ্বাসনালীর সংক্রমণ ও তার থেকে নিউমোনিয়া এবং সেপসিসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ৬৫ বছরের ঊর্ধে নারী পুরুষ নির্বিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শে নিউমোনিয়ার টিকা নেওয়া উচিৎ। যাঁদের ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) আছে তাঁদের আরও আগে এই টিকা নেওয়া দরকার।
  • প্রতিবছর ঋতু পরিবর্তনের সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। বয়স্কদের জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা মারাত্মক হতে পারে। তাই প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া দরকার।
  • যাঁদের টিটেনাসের টিকা দেওয়া নেই তাঁদের এই টিকা দিয়ে নিলে ভাল হয়।
  • জোস্টার ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে ত্বকের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়।

 

কিছু কিছু টিকা দেবার পর সামান্য জ্বর ও ব্যথা হতে পারে। দুএকদিনের মধ্যেই আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। মনে রাখবেন টিকার জায়গায় সেঁক দেবেন না।

চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে টিকা নিন ও অসুখ বিসুখ থেকে সুরক্ষিত থাকুন, জমিয়ে বাঁচুন।